Here you will see the details of a News or Event

যথাযোগ্য মর্যাদায় কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় -এ মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উদযাপিত।

প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় নানান কর্মসূচি পালনের মধ্যে দিয়ে মহান বিজয় দিবস ২০২৫ পালিত হয়েছে।

 

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে সকাল ৮:৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সামনে সম্মিলিত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গেয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহঃ রাশেদুল ইসলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিষয়ক উপদেষ্টা ও কৃষি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো: আব্দুল আলীমএ সময় উপস্থিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তাকর্মচারীবৃন্দ মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল শহীদগণের রুহের মাগফিরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। এরপর অস্থায়ী বেদিতে সকল শহীদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

 

সকাল ৯ ঘটিকায় ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ থেকে একটি বর্ণাঢ্য বিজয় র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি অস্থায়ী একাডেমি বিল্ডিং থেকে অস্থায়ী প্রশাসনিক বিল্ডিং প্রদক্ষিণ করে পুনরায় একাডেমি বিল্ডিং প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। র‌্যালি শেষে সকাল ১০ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে বিজয় দিবসের উপর আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

 

আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিষয়ক উপদেষ্টা ও কৃষি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো: আব্দুল আলীম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহঃ রাশেদুল ইসলামঅন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সহকারী প্রক্টর সাফিয়া খাতুন নিরা, অস্থায়ী ছাত্রী হলের সহকারী প্রভোস্ট রুমানা ইসলাম, অস্থায়ী ছাত্র হলের সহকারী প্রভোস্ট আহসানুল হক, ডেপুটি রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ মোঃ সাদেকুজ্জামান প্রমুখএ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহঃ রাশেদুল ইসলাম বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ মূলত হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি জাতির প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানিদের বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালো রাতে পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অপারেশন সার্চ লাইট নামে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে বাঙালিদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে। সেই প্রেক্ষিতে ২৬ শে মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেনএই ঘোষণা থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে আপামর বাঙালি জাতি মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে

 

তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং ১৯৪৭ সাল থেকে বিভিন্ন আন্দোলন সহ সর্বশেষ ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে যে সমস্ত ছাত্র-জনতা নিজের জীবন অকাতরে বিসর্জন দিয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পাশাপাশি গত ১২ই ডিসেম্বর, শুক্রবার সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত জুলাইযোদ্ধা ওসমান হাদীর সুস্থতা কামনা করেন

 

উপাচার্য মহোদয় কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সকল শহীদগণের আত্মত্যাগের আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করতে হবে। তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রত্যেককে দায়িত্ববান নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ, মর্যাদাশীল এবং মানবিক দেশ হিসেবে বিনির্মাণ করার জন্য এই প্রজন্মকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবেতবেই শহীদদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে এবং তাদের আত্মা শান্তি পাবে।

 

সভাপতির বক্তব্যে শিক্ষার্থী বিষয়ক উপদেষ্টা ও কৃষি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো: আব্দুল আলীম মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদগণের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীবর্তমান প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার আহ্বান জানানএই দেশের স্বাধীকার আন্দোলনে ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ, হাজী শরীয়ত উল্লাহ্, তিতুমীর, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে মাওলানা ভাসানীর বিশেষ ভূমিকার কথা স্মরণ করেন

 

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী জনসংখ্যা সাত কোটি হলেও ১৯৭৪ সালে খাদ্যের অভাবের কারণে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল কিন্তু কৃষিবিদদের গবেষণা ও ভূমিকার কারণে আঠার কোটি জনসংখ্যার দেশ আজকে খাদ্য স্বয়ংসম্পন্নমহান শহীদগণের আত্মত্যাগের চেতনাকে ধারণ করে আগামীদিনে শিক্ষার্থীদের উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান

 

আলোচনা সভা শেষে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ী ও রানার্সআপ শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয় এবং সভার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।